প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক রাবেয়া খাতুনের প্রতি সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা জানানো হয়েছে৷ সোমবার (৪ জানুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টা থেকে বাংলা একাডেমির নজরুল মঞ্চের সামনে তার শ্রদ্ধা অনুষ্ঠান শুরু হয়৷
আওয়ামী লীগের পক্ষে দলটির সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন শ্রদ্ধা নিবেদন করেন৷ এছাড়াও রাবেয়া খাতুনের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, বাংলা একাডেমির সভাপতি শামসুজ্জামান খান ও মহাপরিচালক হাবিবুল্লাহ সিরাজী, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার, নাট্যজন মামুনুর রশিদ ও নাসির উদ্দিন ইউসুফ৷
শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে তথ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলা সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করেছেন রাবেয়া খাতুন। অর্ধ শতাধিক উপন্যাস ও চার শতাধিক গল্প লিখেছেন তিনি। এমন একজন লেখিকার চলে যাওয়া বাংলা সাহিত্যের অপূরণীয় ক্ষতি। তারচেয়ে বড় কথা, তিনি যেই সময়ে সাহিত্য রচনা শুরু করেছিলেন, সেসময়ে নারীদের ক্ষেত্রে সেটা খুব সহজ ছিলো না। কিন্তু তিনি তার কাজে সফল হয়েছেন।
মন্ত্রী বলেন, বাংলা সাহিত্যে রাবেয়া খাতুনের মতো খুব বেশি লেখিকা পাওয়া যাবে না, তার প্রয়াণে আমি গভীর শোক প্রকাশ করছি। প্রার্থনা করছি, তার আত্মা যেন শান্তি পায়।
তিনি আরো বলেন, রাবেয়া খাতুন শুধু বাংলা সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করেননি বরং তিনি তার পরিবারকে একটি সংস্কৃতিমনা পরিবার হিসেবে গড়ে তুলেছেন। ফরিদুর রেজা সাগর তার সন্তান, যিনি চ্যানেল আইয়ের মাধ্যমে বাংলা সংস্কৃতিকে দারুণভাবে তুলে ধরছেন। লালন করছেন, ধারণ করছেন এবং ছড়িয়ে দিচ্ছেন। তার পুরো পরিবার সংস্কৃতিকে সমৃদ্ধ করেছেন। তার সন্তানদের প্রতি সমবেদনা জানাই।
প্রাতিষ্ঠানিকভাবে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয় তথ্য মন্ত্রণালয়, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়, বাংলা একাডেমি, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, গণসঙ্গীতশিল্পী সমন্বয় পরিষদ, ঢাকা পদাতিক, জাতীয় কবিতা পরিষদ৷
বাংলা একাডেমি থেকে রাবেয়া খাতুনের মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় চ্যানেল আই কার্যালয়ে৷ সেখানে বাদ জোহর তার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়৷ এরপর বনানী কবরস্থানে রাবেয়া খাতুনের দাফন সম্পন্ন করা হয়৷
স্বাধীনতা পুরস্কার, একুশে পদক ও বাংলা একাডেমিসহ অসংখ্য পুরস্কার ও সম্মাননায় ভূষিত প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক রাবেয়া খাতুন। রবিবার বিকালে বাধ্যর্কজনিত কারণে মৃত্যুবরণ করেন তিনি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৬ বছর।
উপন্যাস, ছোটগল্প, ভ্রমণকাহিনী, কিশোর উপন্যাস, স্মৃতিকথাসহ চলচ্চিত্র ও নাট্য জগতেও বিচরণ রাবেয়া খাতুনের। তার মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক উপন্যাস ‘মেঘের পরে মেঘ’ জনপ্রিয় একটি চলচ্চিত্র। ‘মধুমতি’ এবং ‘কখনো মেঘ কখনো বৃষ্টি’ও প্রশংসিত হয়েছে সব মহলে।